নিচের কোনটি অসংক্রামক রোগের বিকাশ ও অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে?

নিচের কোনটি অসংক্রামক রোগের বিকাশ ও অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে? যে ধরনের রোগ গুলো একজন থেকে আরেকজনের ছড়ায় না ছোঁয়াচে না তাদের অসংক্রামক ব্যাধি রোগ বলা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একটি চিকিৎসক সংক্রান্ত শারীরিক অবস্থা রোগ যেটা এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে ছড়ায় না। সারা দুনিয়া জুড়ে অসংক্রামক ব্যাধি এখন মাথাচড়া দিয়ে উঠেছে দেশজুড়ে। উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিকস হৃদরোগ ইত্যাদি ও অসংক্রামক ব্যাধি মরণঘাতক। 

আক্রান্ত মানুষের মধ্যে তাদের পূর্বপুরুষের রোগ পারিবারিক ইতিহাসই থাকে। পারিবারিক বা জিনগত জেনেটিক রোগ গুলোর ক্ষেত্রে ইতিহাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে যোগ হয় পরিবেশগত উপাদান পরিবেশ দূষণ অস্বাস্থ্যকর ও বাজে খাদ্যবাস ধূমপান মানসিক চাপ ইত্যাদি। বর্তমান সময়ে অনেক কম বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এ ধরনের রোগ গুলোর।সারা পৃথিবী জুড়ে মানুষ কম বয়সে কর্ম ক্ষমতা হারাচ্ছেন পারিবারিক ব্যয় বাড়ছে এই ক্ষেত্রে। তাই সময় মত সচেতন হলে বংশপরম্পরা থাকায় এসব রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।


নিচের কোনটি অসংক্রামক রোগের বিকাশ ও অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে?

নিচের কোনটি অসংক্রামক রোগের বিকাশ ও অগ্রগতিকে প্রভাবিত করে?

সাধারণত চার ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি আছে যেমনটা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের বাধা বস্তুতার রোগ, বহুমূত্র বা ডায়াবেটি। হৃদ যন্ত্রের বৈকল্য এবং উচ্চ রক্তচাপ জনিত মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ।দীর্ঘ কাল স্থায়ী বিশেষ ফুসফুসের বাধাগ্রস্থ তার রোগ এবং হাঁপানি এবং বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস রোগ।সাবধানতা ও প্রতিকার বলতে আমরা যেটা বোঝায় পরিবারের অসংক্রামক ব্যাধি জনিত রোগ আছে উচিত হবে তাদের বিশেষভাবে সচেতন হওয়া। 

শৈশব কাল থেকেই এ ধরনের পরিবারের সন্তানদের দিকে খুব গুরুত্ব মনোযোগ হতে হবে।যেমনটা ওজন বেড়ে যাওয়া অতিরিক্ত ফাস্টফুড আইটেম খাওয়া কমল পানীয় খাওয়া ধূমপান করা এসব বিষয়গুলো আছে, যেগুলো ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বহু গুণ।ছোটকাল থেকেই অল্প শ্রম ব্যায়াম ও খেলাধুলার উৎসাহী করতে হবে তাদের। তাজা কাঁচা শাকসবজি ফল ও আশ যুক্ত খাবার খেতে হবে বেশি বেশি। যদি পরিবারের মা-বাবার ডায়াবেটিস থাকে তাদের তরুণী কন্যা সন্তানদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ও ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে বেশি। তাই পরিবারের মেয়েদেরও হতে হবে অনেক বেশি সচেতন। 

অনেক বেশি মোটা হওয়া এবং কায়িক শ্রমের অভাবে এই ঝুঁকি বাড়বে অনেক বেশি। এসব তরুণীদের উচিত সন্তান নেওয়ার আগেই নিজেদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে চলা, নিয়মিত ব্যায়াম করা ও খাদ্যবাস পরিবর্তন করা। তাই পাশাপাশি নিয়মিত নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত, 35 বছর বয়সের পর থেকেই বছরে একবার অন্তত রক্তের শর্করা, চর্বির পরিমাণ, রক্তচাপ মাপা উচিত। মাত্রা ক্রস লাইন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। 

উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিকমতো আছে কিনা তা ভালো করে দেখা। পরিবারের সন্তানদের সামান্যতম উপসর্গকেও অপেক্ষা করা মোটেও যাবে না। মেয়েদের গর্ভকালীন সময়ে অবস্থায় রক্তের শর্করা দেখে নিয়মিত নিবেন। মা কিংবা পরিবারের অন্য কারো স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে অবশ্যই নিজের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজন হলে আল্ট্রাসনোগ্রাম বা মেমোগ্রাফি করান চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। কমল ক্যান্সারের যদি ইতিহাস থাকে পরিবারের খাদ্য বাস পাল্টানো খুবই জরুরী। লাল মাংস যেমন গরু খাসি ইত্যাদি কম খাবেন বেশি খাবেন আশযুক্ত খাবার তাজা ফলমূল। কিছু জীনগত রোগ আছে যেমন থ্যালাসেমিয়ার জিন বংশগতভাবে সন্তানদের পেয়ে থাকে অনেক ক্ষেত্রে। এসব ক্ষেত্রে শিশুকাল অবস্থান থেকেই তার যথাযথ স্ক্রিনিং রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন অতি জরুরী।এ সকল রোগের কারণে পরিবারের নিজেদের মধ্যে বিয়ে না হওয়াই খুবই ভালো। 


সংক্রামক রোগ বলতে আমরা কি বুঝি?

সংক্রামক রোগ বলতে আমরা যেসব রোগ বুঝি, যেমনটা একজন অসুস্থ রোগী থেকে আরেকজনের শরীরের ছড়িয়ে পড়া। এই ছড়িয়ে পড়া রোগটা শুধু মানুষ থেকে হয় না,পশুপাখি থেকেও হয়ে থাকে পশুপাখি থেকে পশু পাখির মাঝে কিংবা মানুষ থেকে পশুপাখির মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বর্তমান সময়ে সংক্রামক রোগ এর প্রকোপ অনেক কমে যাচ্ছে। বরং অসংক্রামক জীবনঘাতী রোগ দিন দিন মহামারী আকারে বেড়ে যাচ্ছে এবং দেখা যাচ্ছে। 

সংক্রামক রোগ ছড়ানোর মাধ্যম কি কি?

  1. স্পর্শ বেশি কিছু রোগের ছড়ায় যেমন স্কেবিস, ছত্রাক জনিত চর্মরোগ।
  2. যৌন সংস্পর্শ এইডস রোগ সিফিলিস রোগ গনোরিয়া রোগ হেপাটাইটিস বি সি।
  3. খাদ্য ও প্রাণী ও টাইফয়েড রোগ, পোলিও রোগ, হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া, আমাশা বিভিন্ন কৃমি সংক্রমণ রোগ।
  4. বায়ুবাহিত যক্ষা রোগ ইনপ্লুয়েন্স হপিং কাশি, নিউমোনিয়া মেনিনজাইটিস, ব্রংকওিলাইটি, হাম, বসন্ত, ম্যাম্পস, রুবেলা, করোনা ভাইরাস।
  5. ভেক্টর বাহিত মশা ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া ইয়েলো ভি বার ম্যালেরিয়া ফাইলেরিয়াস।
  6. ত্বকের মাধ্যমে কিছু রোগ এজেন্টা সরাসরি ত্বকে সংস্পর্শ ছড়িয়ে পড়তে পারে,যেমনটা ছত্রাক যা দাদ সৃষ্টি করে, ছত্রাক যা ক্রীড়াবিদর পায়ে সৃষ্টি করে। যাই হোক এ সকল রোগ সম্ভবত প্রায়ই হুমাইদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

অসংক্রামক রোগের বিরূপ প্রভাব সব বয়সের উপরে কেন?

প্রতিবছরে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৬৭% অসংক্রাম রোগে ভুগছে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে প্রথমে সবারই দরকার সচেতন হওয়া। প্রতিটা দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হয় এই অসংক্রামক রোগের কারণে। সব অঞ্চল দেশ জুড়ে সব বয়সী মানুষের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে প্রতিনিয়ত। প্রতিটা দেশে দেশে অসংক্রামক রোগে প্রভাব কমাতে হলে, বিনামূল্যে রোগ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি সমগ্র সরকার ব্যবস্থাকে এই উদ্যোগ নিতে হবে। ঢাকায় প্রথমবার জাতীয় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের সমাপনী দিনে গত শুক্রবার গৃহীত ঢাকা গবেষণার এসব কথা বলা হয়। 

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করার জন্য 32 দফা কাজের কথা বলা হয়েছে। ঢাকার একটি তারকা হোটেলের তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে।সহায়তা করে ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএ, বিএসএমএমইউ ও আইসিডিডিআর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশনের উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ক্যান্সার দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ হৃদরোগ মানসিক রোগ খাদ্যভ্যাস নানা বিষয়ে নিয়ে প্রায় অর্ধেক শত বিজ্ঞানীদের প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকরা। অধিবেশনে বেশি বলা হয় অপরি কল্পিত নগরায়ন পরিপূর্ণ খাদ্য বা শারীরিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কর জীবনে যাপন ভেজাল খাদ্য ধূমপান অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।অসংক্রামক রোগ মোকাবেলা করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। পুরো সরকার ব্যবস্থাপনাকে যুক্ত হওয়া অতি জরুরী।  

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url